بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
فَهَزَمُوهُم بِإِذۡنِ ٱللَّهِ وَقَتَلَ دَاوُۥدُ جَالُوتَ وَءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلۡمُلۡكَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَعَلَّمَهُۥ مِمَّا يَشَآءُۗ وَلَوۡلَا دَفۡعُ ٱللَّهِ ٱلنَّاسَ بَعۡضَهُم بِبَعۡضٖ لَّفَسَدَتِ ٱلۡأَرۡضُ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ ذُو فَضۡلٍ عَلَى ٱلۡعَٰلَمِينَ
অতঃপর তারা তাদেরকে বিতাড়িত করলো আল্লাহ্র নির্দেশে এবং দাউদ জালূতকে হত্যা করলো এবং আল্লাহ্ তাকে বাদশাহী ও হিকমত দান করলেন এবং তাকে যা চেয়েছেন শিক্ষা দিয়েছেন। আর যদি আল্লাহ্ মানুষের মধ্য থেকে এককে অন্যের দ্বারা প্রতিহত না করেন, তবে অবশ্যই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে; কিন্তু আল্লাহ্ সমগ্র জাহানের উপর অনুগ্রহশীল।
تِلۡكَ ءَايَٰتُ ٱللَّهِ نَتۡلُوهَا عَلَيۡكَ بِٱلۡحَقِّۚ وَإِنَّكَ لَمِنَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ
এগুলো হচ্ছে আল্লাহ্র আয়াত, যেগুলো হে মাহবুব, আমি আপনার উপর ঠিকঠিক পড়ছি এবং আপনি নিশ্চয় রসূলগণের অন্তর্ভূক্ত।
۞تِلۡكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۘ مِّنۡهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُۖ وَرَفَعَ بَعۡضَهُمۡ دَرَجَٰتٖۚ وَءَاتَيۡنَا عِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ٱلۡبَيِّنَٰتِ وَأَيَّدۡنَٰهُ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِۗ وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقۡتَتَلَ ٱلَّذِينَ مِنۢ بَعۡدِهِم مِّنۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُمُ ٱلۡبَيِّنَٰتُ وَلَٰكِنِ ٱخۡتَلَفُواْ فَمِنۡهُم مَّنۡ ءَامَنَ وَمِنۡهُم مَّن كَفَرَۚ وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقۡتَتَلُواْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَفۡعَلُ مَا يُرِيدُ
এঁরা রসূল, আমি তাঁদের মধ্যে এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠ করেছি। তাঁদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ্ কথা বলেছেন এবং কেউ এমনও আছেন, যাঁকে সবার উপর মর্যাদাসমূহে উন্নীত করেছেন। আর আমি মরিয়ম-তনয় ঈসাকে স্পষ্ট নির্দশনসমূহ প্রদান করেছি; এবং পবিত্র রূহ দ্বারা তাঁকে সাহায্য করেছি; আর আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদের পরবর্তীগণ পরষ্পর যুদ্ধ করতো না এরপর যে, তাঁদের নিকট স্পষ্ট নির্দশনসমূহ এসেছে; কিন্তু তারা তো পরস্পর বিরোধকারী হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে কেউ ঈমানের উপর রইলো এবং কেউ কাফির হয়ে গেলো; আর আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তারা পরষ্পর যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতো না; কিন্তু আল্লাহ্ যা চান করে থাকেন।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَنفِقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰكُم مِّن قَبۡلِ أَن يَأۡتِيَ يَوۡمٞ لَّا بَيۡعٞ فِيهِ وَلَا خُلَّةٞ وَلَا شَفَٰعَةٞۗ وَٱلۡكَٰفِرُونَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্র পথে আমার প্রদত্ত (সম্পদ) থেকে ব্যয় করো ওই দিন আসার পূর্বে, যার মধ্যে না কোন বেচাকেনা থাকবে, না কাফিরদের জন্য বন্ধুত্ব এবং না শাফা’আত; এবং কাফিরগণ নিজেরাই অত্যাচারী।
ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَيُّ ٱلۡقَيُّومُۚ لَا تَأۡخُذُهُۥ سِنَةٞ وَلَا نَوۡمٞۚ لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ أَيۡدِيهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيۡءٖ مِّنۡ عِلۡمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۖ وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ
আল্লাহ্ হন, যিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি নিজে জীবিত এবং অন্যান্যাদের অধিষ্ঠিত রাখেন। তাঁকে না তন্দ্রা স্পর্শ করে, না নিদ্রা।তাঁরই, যা কিছু আস্মানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে। সে কে, যে তাঁর সম্মুখে সুপারিশ করবে, তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে? (তিনি) জানেন যা কিছু তাদের সম্মুখে রয়েছে এবং যা কিছু তাদের পেছনে। আর তারা পায়না তাঁর জ্ঞান থেকে, কিন্তু যতটুকু তিনি চান। তাঁর ‘কুরসী’ আস্মানসমূহ ও যমীন ব্যাপী এবং তাঁর জন্য ভারী নয় এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ। আর তিনিই হন উচ্চ, মহা মর্যাদাসম্পন্ন।
لَآ إِكۡرَاهَ فِي ٱلدِّينِۖ قَد تَّبَيَّنَ ٱلرُّشۡدُ مِنَ ٱلۡغَيِّۚ فَمَن يَكۡفُرۡ بِٱلطَّـٰغُوتِ وَيُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
কোন জোর জবরদস্তী নেই ধর্মের মধ্যে; নিশ্চয় খুবই স্পষ্ট হয়েছে সত্যপথ ভ্রান্তি থেকে। সুতরাং যে শয়তানকে অমান্য করে এবং আল্লাহ্র উপর ঈমান আনে, সেএমন এক মজবুত গ্রন্থি ধারণ করেছে, যা কখনো খুলে যাবার নয়; এবং আল্লাহ্ শ্রোতা, জ্ঞাতা।
ٱللَّهُ وَلِيُّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ يُخۡرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَوۡلِيَآؤُهُمُ ٱلطَّـٰغُوتُ يُخۡرِجُونَهُم مِّنَ ٱلنُّورِ إِلَى ٱلظُّلُمَٰتِۗ أُوْلَـٰٓئِكَ أَصۡحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ
আল্লাহ্ মুসলমানদের অভিবাবক, তাদেরকে অন্ধকার রাশি থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন এবং কাফিরদের সাহায্যকারী হচ্ছে শয়তান। তারা তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকার রাশির দিকে বের করে নেয়। এসব লোক দোযখবাসী। এদেরকে তা’তে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে।/span>
أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِي حَآجَّ إِبۡرَٰهِـۧمَ فِي رَبِّهِۦٓ أَنۡ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلۡمُلۡكَ إِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِـۧمُ رَبِّيَ ٱلَّذِي يُحۡيِۦ وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا۠ أُحۡيِۦ وَأُمِيتُۖ قَالَ إِبۡرَٰهِـۧمُ فَإِنَّ ٱللَّهَ يَأۡتِي بِٱلشَّمۡسِ مِنَ ٱلۡمَشۡرِقِ فَأۡتِ بِهَا مِنَ ٱلۡمَغۡرِبِ فَبُهِتَ ٱلَّذِي كَفَرَۗ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ
হে মাহবুব! আপনি কি দেখেন নি তাকে, যে ইব্রাহীমের সাথে বিতর্ক করেছে তাঁর রব সম্পর্কে, এর উপর যে, আল্লাহ্ তাকে বাদশাহী দিয়েছেন? যখন ইব্রাহীম বললেন, ‘আমার রব তিনিই, যিনি জীবন দান করেন ও মৃতু ঘটান।’ সে বললো, ‘আমিও জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই।’ ইব্রাহীম বললেন, তাহলে, আল্লাহ্ সূর্য উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে, তুমি সেটাকে পশ্চিম দিক থেকে নিয়ে এসো। অতঃপর হতবুদ্ধি হয়ে গেলো কাফির। এবং আল্লাহ্ সৎপথ দেখান না অত্যাচারীদেরকে।
أَوۡ كَٱلَّذِي مَرَّ عَلَىٰ قَرۡيَةٖ وَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَىٰ عُرُوشِهَا قَالَ أَنَّىٰ يُحۡيِۦ هَٰذِهِ ٱللَّهُ بَعۡدَ مَوۡتِهَاۖ فَأَمَاتَهُ ٱللَّهُ مِاْئَةَ عَامٖ ثُمَّ بَعَثَهُۥۖ قَالَ كَمۡ لَبِثۡتَۖ قَالَ لَبِثۡتُ يَوۡمًا أَوۡ بَعۡضَ يَوۡمٖۖ قَالَ بَل لَّبِثۡتَ مِاْئَةَ عَامٖ فَٱنظُرۡ إِلَىٰ طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمۡ يَتَسَنَّهۡۖ وَٱنظُرۡ إِلَىٰ حِمَارِكَ وَلِنَجۡعَلَكَ ءَايَةٗ لِّلنَّاسِۖ وَٱنظُرۡ إِلَى ٱلۡعِظَامِ كَيۡفَ نُنشِزُهَا ثُمَّ نَكۡسُوهَا لَحۡمٗاۚ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُۥ قَالَ أَعۡلَمُ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
অথবা ওই ব্যক্তির ন্যায়, যে অতিক্রম করলো একটা জনপদের উপর দিয়ে এবং তা ভেঙ্গে পড়েছিলো সেগুলোর ছাদগুলোর উপর। বললো, ‘আল্লাহ্ এটাকে কীভাবে জীবিত করবেন এটার মৃত্যুর পর?’ অতঃপর আল্লাহ্ তাঁকে মৃত রাখলেন একশ’ বছর। তারপর পূনর্জীবিত করে দিলেন। বললেন, ‘তুমি এখানে কতোকাল অবস্থান করলে?’ আরয করলো, ‘সম্ভবত: পূর্ণ দিন অথবা কিছু কম।’ তিনি বললেন, ‘না, বরং তোমার উপর একশ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে এবং আপন খাদ্য-পানীয়ের দিকে দেখো, এখনো পর্যন্ত দুর্গমন্ধময় হয়নি; এবং আপন গাধার প্রতি তাকাও, যার অস্থিগুলো পর্যন্ত সঠিক অবস্থায় থাকেনি! এবং এটা এজন্য যে, আমি তোমাকে মানুষের জন্য নিদর্শন করবো; এবং ওই অস্থিগুলোর দিকে দেখো, কিভাবে সেগুলোর উথান প্রদান করি, অতঃপর সেগুলোকে মাংসাবৃত করি।’ যখন এ ঘটনা তাঁর নিকট সুস্পষ্ট হয়ে গেলো, (তখন) বললেন, ‘আমি খুব ভালভাবে জানি যে, আল্লাহ্ সবকিছু করতে পারেন।’
وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِـۧمُ رَبِّ أَرِنِي كَيۡفَ تُحۡيِ ٱلۡمَوۡتَىٰۖ قَالَ أَوَلَمۡ تُؤۡمِنۖ قَالَ بَلَىٰ وَلَٰكِن لِّيَطۡمَئِنَّ قَلۡبِيۖ قَالَ فَخُذۡ أَرۡبَعَةٗ مِّنَ ٱلطَّيۡرِ فَصُرۡهُنَّ إِلَيۡكَ ثُمَّ ٱجۡعَلۡ عَلَىٰ كُلِّ جَبَلٖ مِّنۡهُنَّ جُزۡءٗا ثُمَّ ٱدۡعُهُنَّ يَأۡتِينَكَ سَعۡيٗاۚ وَٱعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ
এবং যখন আরয করলো ইব্রাহীম, ‘হে আমার রব! আমাকে দেখিয়ে দাও, তুমি কিভাবে মৃতকে জীবিত করবে।’ এরশাদ করলেন, ‘তোমার কি নিশ্চিত বিশ্বাস নেই?’ আরয করলো, ‘নিশ্চিত বিশ্বাস কেন থাকবে না? কিন্তু আমি এই চাই যে, আমার অন্তরে প্রশান্তি এসে যাক!’ এরশাদ করলেন, ‘তবে আচ্ছা! চারটা পাখী নিয়ে তোমার সাথে নেড়েচেড়ে নাও। অতঃপর সেগুলোর একেক খণ্ড প্রতিটি পাহাড়ের উপর রেখে দাও, অতঃপর সেগুলোকে আহ্বান করো, সেগুলো তোমার নিকট চলে আসবে নিজ পায়ে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।